নিজস্ব প্রতিবেদক
সাভার
পৌরসভার ভাটপাড়া এলাকায় নার্গিস আক্তার নামের এক প্রবাসীর স্ত্রীর কেনা
জমি প্রভাবশালী আওয়ামী নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকার
ভূমিদস্যু হাসান মাহমুদ গংরা দখল করে রেখেছেন বলে অভিযোগ করেছেন অসহায়
পরিবারের লোকজন।ঢাকায় বসবাসরত পরিবারটি এ নিয়ে কথা বলতে আসলে উল্টো ভয়ভীতি ও
প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিগত
দিনে প্রাণ ভয়ে এ নিয়ে কথা না বলতে পারলেও, ৫ আগস্ট সরকারের পরিবর্তন ও
অন্তবর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা নেওয়ায় সঠিক আইনি সহায়তা পেতে এ নিয়ে থানায়
একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রবাসীর স্ত্রী মোসাম্মৎ নার্গিস আক্তার।
লিখিত
অভিযোগে বলা হয়েছে, তার স্বামী আবুল কালাম আজাদ সাভার মডেল থানাধীন
ভাটপাড়া মৌজায় ৫.৯৭ শতাংশ জায়গা কিনেন। কেনা জমিটির মালিকানায় তাদের
দুজনের নাম রয়েছে। যার আর এস খতিয়ান নং - ৯০, আর এস দাগ নং- ৩৪, বিএস
খতিয়ান নং- ৩০৫, বিএস দাগ নং- ৩৪। জমি কেনবার পর তারা জমিটির বাউন্ডারি
দেন। ঢাকায় বসবাস করায় খুব একটা আসা হতো না জমিতে। সে সুযোগ নিয়ে সাভার
থানাধীন ভাটপাড়া জামশিং মহল্লার ভূমিদস্যু চক্রের হোতা হাসান মাহমুদ জলিল
(৫৫), মুশফিকুর রহমান(২৫), সুমন(৩০), রিয়াজুল মুনতাজ গংরা তাদের জমির
বাউন্ডারি ভেঙ্গে পার্শ্ববর্তী জমির সাথে মিলিয়ে নতুন বাউন্ডারি ও
সাইনবোর্ড টানিয়ে দিয়েছেন। বিষয়টির নিয়ে কথা বলতে গেলে এ নিয়ে বাড়াবাড়ি
করলে ভূমিদস্যু হাসান মাহমুদ জলিল গংরা ভয়ভীতি ও প্রাণে মেরে ফেলবার হুমকি
দেয়।
সরেজমিনে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বাউন্ডারি ভেঙ্গে নার্গিস
আক্তার ও আবুল কালামের আজাদের কেনা ৫.৯৭ শতাংশ জায়গার ১.৩৪ শতাংশ জায়গা
দখল করে হাসান মাহমুদ জলিলের নামে জায়গার মালিকানার সাইনবোর্ড টাঙিয়ে
দিয়েছেন। সে সাইনবোর্ডের পাশেই বায়না সূত্রে ক্রয়কৃত জমির মালিকানা দাবী
করে আরেকটি সাইনবোর্ড দেখা গেছে।
নার্গিস আক্তার এই প্রতিবেদককে
জানান, ভূমিদস্যু হাসান মাহমুদ জলিল গংরা আমার জমির দখল করে নিয়ে
পার্শ্ববর্তী জমির সাথে মিলিয়ে সে জমি আরেকজনের কাছে বিক্রি করবার
পাঁয়তারা করছেন। আমার স্বামীর বিদেশের কষ্টের টাকা দিয়ে কেনা জমি উদ্ধারে
আমরা দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। তবু কোনভাবেই পারছি না। ভবিষ্যৎ এর কথা ভেবে
কেনা জমি এভাবে দখল করে নেওয়ায় আমরা বহু কষ্টের মধ্যে আছি। আওয়ামী লীগের
পরিচয় দিয়ে ওরা আমার জমি দখল করে রেখেছে। এখন তো দেশ স্বাধীন হয়েছে,
এখনো তো ওদের কিছু করতে পারছি না।
এ বিষয় জানতে অন্যদের না পেয়ে
সাইনবোর্ডে মালিকানা দাবি করা মুশফিকুর রহমান কে ফোন মুঠোফোনে কল করা হলে
তিনি জানান, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা, আমার নাম সাইনবোর্ডে ব্যবহার করা
হয়েছে শুধু । আমি গণস্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী। আমার
শ্বশুর উনি এই ব্যাপারটি জানেন।
সাভার মডেল থানা পুলিশ উপপরিদর্শক
(এসআই) রাজীব সিকদার জানান, নার্গিস আক্তার নামে একজন জমি সংক্রান্ত বিষয়ে
থানায় অভিযোগ করেছেন। আমাকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তবে পূজার
ব্যস্ততার কারণে যেতে পারিনি। এখন ছুটিতে আছি, ছুটি শেষে আমি এসে শ্রীঘ্রই
ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি জেনে জানাতে পারবো।