মাদারীপুর প্রতিনিধি:
কানাইলাল
দাস ছিলেন জেলা ওয়ার্কর্স পার্টির নেতা। আওয়ামীলীগের আমলে ১৪ দলীয় জোটের
নেতা হিসেবে ছিলেন প্রভাবশালী। উপজেলা পরিষদে ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন
করেছিলেন। জেলা আইনজীবি সমিতিরও নেতা ছিলেন। তার আপন বড় ভাই পরিমল চন্দ্র
দাস তার নিজের নামের জমি দেলোয়ার হোসেনের কাছে বিক্রি করেন। বিক্রি করলেও
সেই জমি ভোগ করতে পারেনি ক্রেতা দেলোয়ার হোসেন। এমনই ঘটনা ঘটেছে মাদারীপুর
শহরে। এই ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগী দেলোয়ার হোসেন জেলা প্রশাসক এবং
জেলা আইনজীবী সমিতির কাছে একাধিক দরখাস্ত করেছেন। মাদারীর আদালতে মামলাও
করেন। মামলায় দেলোয়ার হোসের পক্ষে রায় গেলেও তিনি ভোগ দখল করতে পারেননি জমি
ও বসত বাড়ি। এদিকে জেলা প্রশাসক বিষয়টি আমলে নিয়ে পৌর ভূমি অফিসকে তদন্ত
করে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে এবিষয় মাদারীপুর পৌর ভূমি
অফিসের সহকারী কর্মকর্তা হেমায়েত হোসেন দুই পক্ষের কাগজপত্র পর্যালোচনা
এবং উভয়পক্ষের সাথে কথা বলে একটি প্রতিবেদনে দাখিল করেন। সেখানে তিনি
উল্লেখ করেছেন, জমির মালিক পরিমল চন্দ্র দাস। জমির বিআরএস রেকর্ড পরিমল
চন্দ্র দাসের নামে। উক্ত জমিতে কানাই লাল দাসের কোনো স্বত্ত্ব নেই।
ভূমি
অফিস সূত্রে জানা যায়, ১১৪ নং মাদারীপুর মৌজায় ১১৭০ নং এসএ খতিয়ানের
৪৪৮৪নং দাগের ৬ শতাংশ জমি এবং জমির ওপর নির্মিত ঘর পরিমল দাস
আমমুক্তারনামার মাধ্যমে ২০১৭ সালে দেলোয়ার হোসেন মাতুব্বরের কাছে বিক্রি
করেন। এর আগে ২০০৫ সালে জমিটি গৌরাঙ্গ চন্দ্র দাস তার ছেলে পরিমল চন্দ্র
দাসের নামে হস্তান্তর করেছিলেন। তবে ওই জমি বর্তমানে জোরপূর্বক পরিমলের ভাই
কানাই লাল দাস দখল করে রেখেছেন।
অভিযোগ রয়েছে, মালিকানা না থাকা
সত্ত্বেও কানাই লাল দাস আওয়ামীলীগের প্রভাব খাটিয়ে এতোদিন জমি দখল করে
রেখেছেন এবং বিভিন্ন মামলা-মোকদ্দমার মাধ্যমে ক্রেতা দেলোয়ার হোসেনকে
হয়রানি করছেন।এমনকি জমি ভোগদখল করতে গেলে তিনি দেলোয়ার হোসেনের কাছে অর্থ
দাবি করেন।
এ বিষয় দেলোয়ার হোসেন বলেন,“আমার কাছে বৈধভাবে জমি
বিক্রি করেছে কানাই লাল দাসের ভাই। কিন্তু কানাই লাল দাস আইনজীবি হওয়ায়
বারবার মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানি করছেন। আমি ন্যায্য বিচার চাই।”
এ
প্রসঙ্গে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মাহবুবুল আলম শাকিল
বলেন, “যদি কোনো আইনজীবী প্রভাব খাটিয়ে অনৈতিকভাবে কারও ক্ষতি করেন, লিখিত
অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে অভিযুক্ত কানাই দাস সাংবাদিকদের বলেন,“এ ব্যাপারে মামলা চলমান রয়েছে। হয়রানির অভিযোগ মিথ্যা।”