মাদারীপুর প্রতিনিধি:
মাদারীপুর
জেলার শিবচরে স্ত্রী শান্তি বেগম(৩৪) এর মরদেহ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে গেছে
স্বামী মজিবর মাদবর। সোমবার(৯ ডিসেম্বর) বিকেলে গুরুতর আহতাবস্থায়
স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে আসেন তিনি। কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করলে
মুহুর্তেই গা ঢাকা দেন। খবর পেয়ে নিহতের পরিবারের লোকজন হাসপাতালে ছুটে
আসেন। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করেন। নিহত শান্তি বেগমের গলায় ফাঁস বা এ
জাতীয় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
নিহত শান্তি বেগম উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের ছৈয়দউদ্দীন মাদবরকান্দি গ্রামের আব্দুল হাকিমের মেয়ে। প্রায় ১১ বছর আগে উপজেলার
মুন্সী কাদিরপুর এলাকার মেছেরমোল্লার কান্দি গ্রামের রাজমিস্ত্রী মজিবর
মাদবরের সাথে তার বিয়ে হয়। তিনি মজিবর মাদবরের দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন।
নিহতের
স্বজন, হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রথম স্ত্রীর সন্তান না হওয়ায়
১১ বছর আগে শান্তি বেগমকে বিয়ে করেন মজিবর মাদবর। দুই স্ত্রী নিয়ে ঢাকায়
থাকতেন তিনি। প্রায় ৫ বছর আগে ঢাকা থেকে বাড়ি চলে এলে দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে
নানা সময় ঝগড়া-বিবাদ শুরু হয়। এরপর দ্বিতীয় স্ত্রী বাবার বাড়িতেই থাকতো।
গত ৪/৫ দিন ধরে শান্তি বেগমকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যায় স্বামী মজিবর মাদবর।
সোমবার বিকেলে গলায় ওড়না পেঁচানো গভীর দাগ বা এজাতীয় আঘাত নিয়ে হাসপাতালে
স্ত্রীকে নিয়ে আসে স্বামী মজিবর মাদবর। তবে মারা গেলে সে হাসপাতাল থেকেই
লাশ ফেলে পালিয়ে যায়।
নিহতের ভাই তাইজুল ইসলাম
বলেন,'আমার বোনকে মারধর করতো। তাই এতোদিন আমাদের বাড়িতেই ছিল। গত ৩/৪ দিন
ধরে স্বামীর বাড়িতে যাওয়ার পর আজ এ ঘটনা ঘটলো। ওরা (স্বামীর বাড়ির লোকজন)
জানায়, বাথরুমে গলায় ফাঁস দেয়া ছিল। আমার বোনকে মারধর করেছে। গলা টিপে
ধরেছিল। এ কারণেই বোন মারা গেছে। হাসপাতালে লাশ রেখেই মজিবর পলাতক! আমি
অভিযোগ দিয়েছি থানায়। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই আমরা।'
শিবচর
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা.এফ এম ইয়াহিয়া সেতু
বলেন,'নিহতের গলায় গভীর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। হাসপাতালে আনার সময় তার মৃত্যু
হয়।'
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)
মো.মোকতার হোসেন জানান,'খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য
মাদারীপুর মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা ময়না
তদন্তের রিপোর্ট পেলে বলা যাবে।'