info@desherkhabor24.com

+8801821554477

১০ডিসেম্বর মাদারীপুর মুক্ত দিবস

image for ১০ডিসেম্বর মাদারীপুর মুক্ত দিবস

মাদারীপুর প্রতিনিধি:
১০ ডিসেম্বর মাদারীপুর মুক্ত দিবস। মাদারীপুরের সমাদ্দার এলাকায় পাক-বাহিনীর সাথে টানা ৩ দিন ২ রাতের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে এদিন মুক্ত হয় এ জেলা। এদিনই শহীদ হন জেলার সর্ব কনিষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা সরোয়ার হোসেন বাচ্চু।


মুক্তিযোদ্ধা বজলুর রশিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে,  ১৯৭১ সালে মাদারীপুরের বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযোদ্ধারা অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে পাকবাহিনী ও তাদের দোসরদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হন। পাকবাহিনী তাদের দোসরদের নিয়ে মুক্তিকামী মানুষের ঘর-বাড় জ¦ালিয়ে দিতে থাকে। নিরীহ মানুষদের উপরও চালাতে থাকে গণহত্যা, ধর্ষণ ও লুন্ঠন। এদেরকে পরাস্ত করতে মুক্তিযোদ্ধারা মারমুখী হয়ে উঠে। দীর্ঘ ৯ মাস চলে গেরিলা ও সম্মুখ যুদ্ধ। নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই মুক্তিযোদ্ধাদের একের পর এক আক্রমণে হানাদার বাহিনী দিশেহারা হয়ে পড়ে। একে একে এলাকা ছাড়া হয়ে হানাদার ও তাদের দোসররা একীভূত হয় জেলা শহরের এ আর হাওলাদার জুট মিলের ক্যাম্পে।


দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে মাদারীপুরের মুক্তিযোদ্ধারা একের পর এক পরাস্ত করতে থাকে পাক বাহিনী ও তাদের দোসরদের। বিভিন্ন স্থানের যুদ্ধে পরাস্ত হয়ে পাকবাহিনী ও দোসররা মাদারীপুর থেকে পালিয়ে যাবার কৌশল খুঁজতে থাকে।


মুক্তিযোদ্ধা বজলুর রশিদ বলেন, আমরা গোপনে জানতে পারি যে, পাকহানাদার বাহিনী মাদারীপুরের এআর হাওলাদার জুট মিলের ক্যাম্প থেকে পালিয়ে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ সংবাদের ভিত্তিতে ৮ ডিসেম্বর সারারাত ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের সমাদ্দার ব্রিজের চতুর্দিকে অবস্থান নেই। ব্রিজটি জেড ফোর্সের মুক্তিযোদ্ধারা আগেই মাইন দিয়ে উড়িয়ে দেয়ায় শত্রুবাহিনী গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেটে ক্ষতিগ্রস্থ ব্রিজ এলাকা পার হচ্ছিল। তখনই আমরা মুক্তিযোদ্ধারা চতুর্মুখী আক্রমণ করি। তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়। একটানা ৩ দিন ২ রাতের  যুদ্ধে গ্রামবাসীরাও এগিয়ে আসে। ১০ ডিসেম্বর বিজয়ের আগ মুহুর্তে কিশোর মুক্তিযোদ্ধা সরোয়ার হোসেন বাচ্চু শহীদ হন এবং গুরুতর আহত হন আখতারুজ্জামানসহ অনেকে। এ যুদ্ধে ৪০ জন পাক সেনা নিহত হয়। সন্ধ্যায় মেজর খট্টকের নেতৃত্বে ৩৯ জন পাকসেনা ও ১৫ জন রাজাকার আত্মসমর্পণ করে। শত্রুমুক্ত হয় মাদারীপুর।