বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ
বাগেরহাটে
বিএনপি নেতা সজীব তরফদারকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় আবু বক্কর
শিকদার (৫৭) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে তার
স্বীকারোক্তি অনুযায়ী অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হযেছে। ভাড়াটে খুনি দিয়ে
চুক্তিতে হত্যা করা হয় সজীব তরফদারকে। কিলিং মিশনে সরাসরি অংশগ্রহন করা
চারজন ও পরিকল্পনাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছেন
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মোঃ তৌহিদুল আরিফ। শনিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে এক
প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার।
এ
সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও
অর্থ) মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর ও মোরেলগঞ্জ সার্কেল)
এস এম আশিকুর রহমান, বাগেরহাট সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)
মো. সাইদুর রহমান প্রমুখ।
পুলিশ
সুপার তৌহিদুল আরিফ বলেন, ঘটনাস্থলের আলামত, সার্বিক পরিস্থিতি এবং
প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা যা পেয়েছি তা হলো, কিলিং মিশনে
সরাসরি অংশ নেয় ৪ জন, যাদের সবাই ভাড়াটে খুনি। এই চার জনের মধ্যে আবু
বক্কার শিকদার (৫৭) নামের একজনকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। ওই ব্যক্তি স্বীকার
করেছে তারা ভাড়াটে খুনি এবং তাদের মধ্যে চুক্তি হয়েছে খুন করার জন্য।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আবু বক্কর এবং তার এক সহযোগীর সাথে ৩ লাখ টাকার
চুক্তি ছিল বলে জানিয়েছে। অন্য দুজনের সাথে আবু বক্কার শিকদারের পরিচয় নাই
এবং তাদের চুক্তির বিষয়ে আবু বক্কারের কোন ধারণা নেই।
পুলিশ
সুপার আরও বলেণ, আমরা সব বিষয় ক্ষতিয়ে দেখছি। তার বক্তব্যও যাচাই করা
হচ্ছে। হত্যার সম্ভাব্য ৫টি কারণ নিয়ে কাজ করছি। তদন্ত শেষ না হলে এ বিষয়ে
নিশ্চিত করে বলা যাবে না। আমরা আশা করছি হত্যাকাণ্ডের পেছনে
মাস্টারমাইন্ডসহ জড়িত সবাইকে দ্রুত আমরা গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে
পারবো।
গ্রেপ্তার আবু বক্কার শিকদার (৫৭) বাগেরহাট সদর উপজেলার কাড়াপাড়া ইউনিয়নের কাড়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
শুক্রবার
(০৮ নভেম্বর)পিরোজপুর জেলার কাউখালী এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। পরে তার
স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সজীব তরফদারকে হত্যায় ব্যবহৃত দুটি আগ্নেয়াস্ত্র ও
গুলি এবং একটি রামদায়ের হাতল মির্জাপুর সাহাপাড়ার এলাকার জনৈক যমুনা সাহার
বাড়ির পাশের ডোবার পানির ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়।
এদিকে
সজীব হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী নাইমা ফারহানা বাদি হয়ে শুক্রবার (০৮
নভেম্বর) দিনগত রাতে বাগেরহাট সদর মডেল থানায় ১৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত
৮-১০ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এ ছাড়া অস্ত্র
উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে উপপরিদর্শক (এসআই) আনজির হোসেন দাবি হয়ে
একই আসামিদের বিরুদ্ধে আস্ত্র আইনে প্রথক একটি মামলা দায়ের করেছেন।
প্রসঙ্গত,
গেল ৫ নভেম্বর দুপুরে ডেমা গ্রাম থেকে মোটরসাইকেলযোগে বাগেরহাট-রামপাল সড়ক
দিয়ে বাগেরহাট শহরে যাওয়ার পথে মির্জাপুর-আমতলা মসজিদের সামনে গুলি করে ও
কুপিয়ে বিএনপি নেতা মোঃ সজিব তরফদারকে হত্যা করা হয়।