মাদারীপুর প্রতিনিধি:
পুলিশ
কনস্টেবল পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে মাদারীপুর জেলার
সাবেক এসপি ও বর্তমান ডিআইজি সুব্রত কুমার হালদারকে কারাগারে
প্রেরণ করেছে আদালত। বুধবার দুপুরে সিনিয়র স্পেশাল জজ
আদালতের বিচারক নুর মোহাম্মদ আবু শাহরিয়ার কবির এই আদেশ দেন।
সুব্রত হালদার বর্তমানে রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমিতে সংযুক্ত ছিলেন।
জানা
গেছে, সুব্রত কুমার হালদার ২০১৯ সালে মাদারীপুর পুলিশ সুপারের দায়িত্বে
থাকাকালে কনস্টেবল পদে নিয়োগে দুর্নীতির ঘটনা ঘটে। নিয়োগ
প্রার্থীদের পরীক্ষার বিশেষ সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করে অতিরিক্ত নম্বর
প্রদান করেন এবং ১৭ প্রার্থীর কাছ থেকে ১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ঘুষ
নেন। দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম এই
ঘটনায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে আদালত গ্রেফতারি
পরোয়ানা জারি করে। বুধবার দুপুরে এই মামলা আদালতে জামিনের আবেদন করলে আদালত
তাকে জামিন না দিয়ে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেয়।গত বছরের ৫ জুলাই
সুব্রত কুমার হালদারসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল দুদক।
তদন্ত শেষে পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয়।
দুদক
সূত্র জানায়, সুব্রত কুমার হালদার বাদে অন্য আসামিরা হলেন মাদারীপুর
পুলিশ লাইনসের বরখাস্ত হওয়া কনস্টেবল মো. নুরুজ্জামান সুমন ও
জাহিদুল ইসলাম, মাদারীপুর জেলা পুলিশ হাসপাতালের সাবেক মেডিকেল
অ্যাসিস্ট্যান্ট পিয়াস বালা ও মাদারীপুরের সাবেক টিএসআই (শহর উপপরিদর্শক)
গোলাম রহমান।
দুদকের পিপি আনিসুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত
করে জানান, ‘রাষ্টপক্ষ ন্যায় বিচার পেয়েছে। ডিআইজি সুব্রত
হালাদারকে আদালত জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছে।সুব্রত কুমার হালদার
স্বেচ্ছায় আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাইলে আমরা তার তীব্র
আপত্তি জানাই। পরে আদালত তাঁর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ
করেন। সুব্রত কুমার বিরুদ্ধে দুদক স্পষ্টভাবে দুর্নীতি প্রমাণ
পেয়েছে এবং অভিযোগপত্র দাখিলও করেছে। তিনি প্রকাশ্যে ঘুষ নিয়ে অপরাধ করেছে।
তাই রাষ্ট্র তৎপর হয়ে সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছে। রাষ্ট্র ও দুদক ন্যায় বিচার
পেয়েছে।’
মাদারীপুর দুদকের সহকারি পরিচালক আখতারুজ্জামান
বলেন,তদন্তকালে জব্দ করা ৩২টি লিখিত পরীক্ষার খাতা ও আনুষঙ্গিক
রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে অনিয়মের চিহ্ন এবং অতিমূল্যায়নের
প্রমাণ পায়। তিনি যাদের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ করেছিলেন তাদের খাতায় সাংকেতিক
চিহ্ন দেয়া ছিলো এবং এসব প্রার্থীদের খাতায় অতিরিক্ত নম্বর প্রদান করেন।
এসব অপরাধমূলক কাজের জন্য আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছে।