কে এম, রাশেদ কামাল, মাদারীপুর প্রতিনিধিঃ
মাদারীপুরের
রাজৈর উপজেলায় মন্দিরের হিসাব নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রশান্ত হালদার
(৫৫) নামের এক কৃষককে বেধরক মারধর করে নির্মমভাবে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
নিহত ওই কৃষক উপজেলার বাজিতপুর ইউনিয়নের সুতারকান্দি গ্রামের মৃত্যু গণেশ
হালদারের ছেলে। দোষীদের ফাঁসির দাবিতে মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের
সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ ঘটনায়
দোষিদের বিচারের দাবিতে বৃহষ্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ টায় মাদারীপুর
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে নিহতের পরিবার ও এলাকার শত শত মানুষ
বিচারের দাবিতে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন করেন।
এ
ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, গেল শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর)
প্রশান্ত হালদার সন্ধ্যার পরে মশার কয়েল আনার জন্য সাধুর ব্রীজের ভারত
এলাকায় যায়।ভারত এলাকার দোকান থেকে মশার কয়েল নিয়ে বাড়ি উদ্দেশ্য রওনা দিয়ে
শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দিরের সামনে এলে পূর্ব শত্রুতার জেরে একই
গ্রামের সকাল হালদারের ছেলে হরিচান হালদার(৪৫), কার্তিক হালদারের ছেলে
রঞ্জিত হালদার(৩০) জীবন হালদারের ছেলে কৃষ্ণ হালদার(৪০) সহ আরো ৫-৬ জন
সহযোগী মিলে তার ওপর বেধরক লাঠিপেটা শুরু করে। পরে একপর্যায়ে ঘটনাস্থলেই
মৃত্যু হয় প্রশান্তর। এদিকে প্রশান্ত আর বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন তাকে
অনেক খোঁজাখুঁজি করে। রাত সাড়ে আটটার দিকে পথচারী ও স্থানীয় কিছু লোকেরা
শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দিরের ভিতরে দরজার পাশে তার লাশ দেখতে পেয়ে
প্রশান্তর স্বজনদের খবর দেন।
এ ঘটনার সঠিক বিচার চেয়েছেন স্থানীয়রা। তারা হত্যার সাথে জড়িতদের ফাসির দাবি জানান।
নিহত
প্রশান্তের ছোট ভাই সুশান্ত হালদার বলেন, কয়েক মাস আগে আমার দাদার সাথে
মন্দিরের ৫ হাজার টাকার হিসাব নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। পরে স্থানীয় সালিশিরা
এটা মীমাংসা করে দেন। তাতে হরিচান হালদার ও তার লোকজনেরা সন্তুষ্ট না হয়ে
তারই জের ধরে তারা আমার দাদাকে মেরে ফেলেছে। আমরা তাদের ফাঁসি চাই। দাদাই
ছিল তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি নিহতের স্ত্রী শুশমা হালদার ও
দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে প্রনালী হালদার এবং ছেলে প্রান্ত হালদারের একটাই
দাবি যারা তার বাবাকে মেরেছে তাদের ফাঁসি হয়। তার বাবাকে তারা যেভাবে
মেরেছে সেভাবে তাদেরকে জানি মারা হয়। সরকার ও প্রশাসনের কাছে তাদের এটাই
দাবি।
বাজিতপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য তারা
মিয়া বলেন, গেল শনিবার রাত আনুমানিক ৮টার দিকে হরিচান হালদার, রঞ্জিত
হালদার, কৃঞ্চ হালদার ও অজ্ঞাত ৫-৬ জন সহযোগী মিলে প্রাশান্তকে লাঠিপেটা
করে হত্যা করেছে বলে শুনেছি। পরে গ্রামের মানুষ পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ
ময়নাতদন্তের জন্য ঘটনাস্থল থেকে প্রশান্তের মরদেহ নিয়ে যায়।
রাজৈর
থানার ওসি মোঃ শেখ সাদি বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য প্রশান্ত হালদারের মরদেহ
জেলার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।এ ঘটনায় নিহতের পরিবার মামলা
দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে ঘটনার জড়িতদের
আইনের আওতায় আনা হবে।