কে এম, রাশেদ কামাল, মাদারীপুর প্রতিনিধি:
মাদারীপুরের শিবচরে ঝর্ণা (৪০) নামে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে শিবচর থানা পুলিশ।
শুক্রবার বেলা ১১ টার দিকে উপজেলার মাদবরের চর ইউনিয়নের সাড়ে বিশ রশি গ্রামে একটি বাঁশ বাগান থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত ঝর্ণা এলাকার মৃত হাকিম আলী মুন্সির মেয়ে ও নড়াইল জেলার বাসিন্দা খোকন বিশ্বাসের স্ত্রী।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, যে ঝর্ণা বেগম পেশায় একজন শ্রমিক ছিলেন। এরই মধ্যে দুইটি বিয়ে হয় তার।প্রথম সংসারে তার দুইটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। এর পর ২য় বিয়ে হলেও বেশিদিন টিকেনি সেই বিয়ে। ঝর্ণা কাজকের রাস্তায়। মাটিকাটা সহ রাস্তার বিভিন্ন কাজে তিনি দিনমজুর হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করতেন। রাস্তায় কাজ করতে গিয়েই পরিচয় হয় খোকন বিশ্বাস নামে একজনের সাথে। পরিচয় সুত্র ধরে খোকন বিশ্বাসের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন ঝর্ণা। কোনো ভাই নেই তার। চার বোনের মধ্যে তিনবোন যার যার সংসারে আছেন। বাবা মা দুজনেরই মৃত্যু হয়েছে। ঝর্ণা স্বামীকে নিয়ে বাবার বাড়িতেই থাকতেন।
গত কয়েক মাস আগে খোকন বিশ্বাস কাজ করার জন্য চলে যান। মাঝে মধ্যে এসে থাকতেন আবার চলে যেতেন।তবে মাঝে মধ্যে তাদের মধ্যে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সম্পর্কে অবনতি হয়।এই নিয়ে খোকন মারধর করতেন ঝর্ণাকে।
এদিকে গত মঙ্গলবার থেকে ঝর্ণা নিখোঁজ হয়। আত্মীয় স্বজনদের ধারনা ছিলো হয়তো কোনো রাস্তায় কাজে গিয়েছেন। কিন্তু দুদিন ফোন বন্ধ থাকায় সন্দেহ হলে ঝর্ণার স্বামী খোকন বিশ্বাসকে কল করেন। খোকনের মোবাইলও বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর থেকে খুঁজতে থাকেন পরিবারের লোকজন। এক পর্যায়ে আজ সকাল ০৯ টার দিকে বাড়ির পাশের বাঁশ বাগান থেকে গন্ধ বের হলে লোকজন গিয়ে সেখানে ঝর্নার গলিত মরদেহ দেখতে পেয়ে শিবচর থানায় খবর দেয়।পরে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (শিবচর সার্কেল) আনিসুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল মরদেহটি উদ্ধার করে।এদিকে গত কয়েকদিন ধরে খোকনের সাথে কোনো ধরনের যোগাযোগ করতে পারছে না ঝর্ণার পরিবারের কেহ।
নিহতের বড় ছেলে শফিকুল বলেন,আমি ঢাকা থাকি। আমার মায়ের সাথে খোকন বিশ্বাস নামে একজনের বিয়ে হয় ৬ বছর। আমার বাবার সাথে প্রথম সংসার। আমার ১২ বছর বয়সী একটা ভাই আছে। মায়ের ৩য় বিয়ে খোকন বিশ্বাসের সাথে। সে আমার মাকে প্রচুর মারতো। কষ্টে আমি ঢাকাতে কাজ করে খাই। ১ বছর যাবৎ মায়ের সাথে যোগাযোগ করি না। কয়েকদিন যাবৎ মা নিখোজ। আজ মায়ের লাশ পেলাম। এই খোকন বিশ্বাস আমার মাকে হত্যা করে পালিয়েছে। আমি তার বিচার চাই।
সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (শিবচর সার্কেল) আনিসুর রহমান সকালে এলাকার লোকজন শিবচর থানায় খবর দিলে আমরা সেখানে যাই।মরদেহটি দুই তিনদিন আগের মনে হচ্ছে। এছাড়াও শরির পচনের সৃষ্টি হয়েছে। মরদেহটি পোষ্টমর্টেমের জন্য মাদারীপুর পাঠানো হবে।মরদেহটি ফুলে যাওয়ার কারনে আঘাতের চিহ্ন বোঝা যাচ্ছে না।পোস্ট মর্টেমের পরে যানা যাবে।পাশাপাশি খোকন বিশ্বাসের খোজ পাওয়া যাচ্ছে না।আমরা তারও খোজ নিচ্ছি। আমরা ঘটনার তদন্ত শুরু করছি।আশা করছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঘটনার রহস্য বের করতে সক্ষম হবো।