আজমিরীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি:
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে উপজেলার ৬৫ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মধ্যে ৫১ টি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য নেই কোন খেলার মাঠ। এতে প্রায় ১৪ হাজার শিক্ষার্থী পড়ালেখার পাশাপাশি সুষ্ঠু মানসিক বিকাশ ও খেলাধুলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে । ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের মানসিক এবং শাররিক বৃদ্ধি।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার পাচঁটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ৬৫ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এরমধ্যে ৫১টি বিদ্যালয়েরই খেলার মাঠ নেই। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১৪ হাজার। শরীফ নগর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রনিয়া, শুক্রীবাড়ি, মালুম মিয়া, জগৎপুর সহ উপজেলার ৫১টি সরকারি বিদ্যালয়ের পাশে এমনকি কাছাকাছিও কোথাও নেই খেলার মাঠ। সামান্য ভুমির ওপর দাঁড়ানো এসব বিদ্যালয়ের আশপাশে পুকুর, খাল রয়েছে। হইহুল্লোর বা ছুটাছুটি করার জায়গাটুকুও নেই সেখানে। ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা ক্লাসরুমে বসেই পার করে সময়।
শিক্ষকদের সাথে আলাপকালে তাঁরা জানান, তাঁদের বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার পাশাপাশি শিশুদের শাররিক ও মানসিক বিকাশের জন্য কোন খেলার মাঠ নেই। খেলাধুলা শিক্ষার্থীদের দৈহিক গঠন ও মানসিক মেধাবিকাশে সহায়ক। খেলাধুলা শিশুদের সৃজনশীলতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। শারীরিক-মানসিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে এবং মুক্তচিন্তার সুযোগ তৈরি করে।
শরীফনগর আদর্শ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালের প্রধান শিক্ষক মোছা. দিলোয়ারা বেগম বলেন, বিদ্যালয়টি ১২৬ ফুট লম্বা ও প্রায় ১৮ ফুট প্রস্থে ৫ শতক ভূমির উপর নির্মিত। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২১৮ জন। উপস্থিতির হারও ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ। বিদ্যালয়ে জায়গা না থাকায় প্রতিদিন সম্মেলন ও জাতীয় সঙ্গীত বারান্দায় করতে হয়। স্কুলে শিক্ষার্থীদের জন্য খেলাধুলা করার সরঞ্জাম থাকলেও তা শিক্ষার্থীরা ব্যাবহার করতে পারছে না । এছাড়া প্রতিবছর ক্রীড়া প্রতিযোগিতা পার্শ্ববর্তী স্থানীয় গরুর হাট মাঠে করতে হয়।
শুক্রীবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গীতাঞ্জলি দেবী বলেন, বিদ্যালয়ে খেলার মাঠ না থাকার এ্যামালগেমেটেড বীর চরণ মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার অনুষ্টান করা হয়।
শরীফনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাসমিয়া হক সাদিয়া ও হোসেন রওনক বলেন, বিদ্যালয়ে মাঠ না থাকায় খেলতে পারি না। দৌড়ঝাঁপও দিতে পারি না। টিফিনের সময় ক্লাসে বসেই সময় কাটাতে হয়।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মজনুর রহমান বলেন, শিশুদের শারীরিক বিকাশের পাশাপাশি মানসিক বিকাশে খেলার মাঠ জরুরি। এই উপজেলায় অনেক স্কুলে জমির পরিমাণ কম। ১৪ টি বিদ্যালয়ে খেলার মাঠ থাকলেও বাকি বিদ্যালয় গুলোতে প্রতিদিনের সমাবেশ করার মত ও জায়গা নেই। যে কয়েকটি বিদ্যালয়ে মাটি ভরাট করে করে মাঠ তৈরী করার সুবিধা আছে সেগুলোর জন্য চাহিদা প্রেরণ করা হয়েছে।