মাহবুব পিয়াল,ফরিদপুর:
ফরিদপুরের মধুখালি উপজেলায় পাটকল শ্রমিক কাজল রেখা কাজলী (৩২) কে গনধর্ষন ও হত্যার দায়ে দোষীসাব্যস্ত করে ৫ জনকে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করেছে আদালত। এ সময় তাদের প্রত্যেকে ১ লক্ষ টাকা করে জরিমানা করা হয়।
সোমবার (২৪ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৪ টায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ হাফিুজররহমান এ আদেশ দেন।
রায় ঘোষনার সময় সকল আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় শেষে আসামীদের পুলিশ প্রহরায় জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামীরা হলেন- চুন্নু সিকদার, মোঃ নাজমুল হোসেন তেবেজ, ইসলাম মীর, আতিয়ার মোল্যা, মোঃ নাছির খান নয়ন। প্রত্যেকের বাড়ি মধুখালী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ভিকটিম কাজল রেখা কাজলী ফরিদপুরে মধুখালী উপজেলার রাজধরপুর প্রাইডজুট মিলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসের ১৫ তারিখে ওভারটাইম ডিউটি করতে রাত সাড়ে ১১ টার দিকে বের হন। পথিমধ্যে নছিমন চালক চুন্নু সিকদারের নছিমনে ওঠেন মিলে যাবার জন্য, কিন্তু নছিমন চালক চুন্নু সিকদার মিলে না নিয়ে পাশ^বর্তী রাজধরপুর বাবু মিলিটারির কলা বাগানে নিয়ে কাজল রেখা কাজলী কে ধর্ষন করে। পরে কাজল রেখাকে ধর্ষন করতে দেখে ফেলায় অন্য চার আসামী তেবেজ, ইসলাম মীর, আতিয়ার ও নাছির তারাও পালাক্রমে ধর্ষন করে। ধর্ষন শেষে এ ঘটনা কাজল রেখা কাউকে বলে দিলে তাদের মানহানি হবে ভেবে ৫ আসামী কাজল রেখাকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ^াস রোধ করে হত্যা করে কলাবাগানে ফেলে রেখে যায়। পরের দিন সকালে স্থানীয়রা কলা বাগানে লাশ দেখেতে পেয়ে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।
কাজল রেখার মা কল্যানী বিশ্বাস পরের দিন ১৬ আক্টোবর মুধখালী থানায় বাদি হয়ে ধর্ষন ও হত্যা মামলা দায়ের করেন। কাজল রেখার বাড়ি মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার বরালিদহ গ্রামে। কাজের সুবাদে কাজলী মধুখালী থানার রাজধরপুর গ্রামের লাকী বেগমের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।
পরে এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মধুখালী থানার এসআই সাহেব আলী ও সাইফুল আলম ডিসেম্বর মাসের ৩১ তারিখে মোবাইলের কললিস্ট যাচাই বাছাই শেষে ওই ৫ জন আসামী উল্লেখ করে আদালতে চার্জশীট জমা দেন। আদালত দীর্ঘ স্বাক্ষ্য প্রমান দেখে ৫ জন আসামীর বিরুদ্ধে আনিত অপরাধ সন্দেহাতিত ভাবে প্রমানিত হওয়ায় তাদের প্রত্যেককে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করেন। সাথে প্রত্যেককে ১ লক্ষ টাকা করে জরিমানা করা হয়।
এ মামলার রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী এ্যাড. স্বপন কুমার পাল বলেন, আসামীরা প্রত্যেকে নিজেদের দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দী প্রদান করেছে। এর মধ্যে আসামী নয়ন ভিকটিক কাজল রেখাকে হত্যার পরও ধর্ষন করে। আদালত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯(৩) ধারাসহ ৩০২/৩৪ ধারায় আসামীদেরকে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করেছে। এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ঠ। এতে সমাজে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হবে।