নোয়াখালী প্রতিনিধি:
নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ ইসমাঈলসহ দুই সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।
শুক্রবার
(২৮ মার্চ) দুপুরের দিকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন মামলার আইনজীবী
অভিজিৎ শীল। এর আগে, গত ২০ মার্চ নোয়াখালী সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে এ
মামলা দায়ের করা হয়। যাহার দেওয়ানী মামলা নং-২২৮।
মামলার বিবরণে
জানা যায়, ২০১৫ সালের ১ ডিসেম্বর মামলার বাদী সুলতানা রাবেয়া সদর উপজেলার
দারুল আমান ফ্ল্যাট (উত্তর পাড়) জামে মসজিদ মার্কেটের ২ ও ৯নং দোকান মসজিদ
পরিচালনা কমিটির থেকে ভাড়া দেন। প্রতিটি কক্ষের জামানত ৩লক্ষ টাকা করে মোট ৬
লক্ষ টাকা নির্ধারণ করা হয়। একই তারিখে ১০০শত টাকার তিনটি নন জুডিসিয়াল
স্ট্যাম্পে লিখিত ও স্বাক্ষর চুক্তি হয়। মামলার বাদী সেখানে সাইনবোর্ড
প্রিন্ট করার মেশিন স্থাপন করে এবং ৯নং কক্ষ গোডাউন হিসেবে ব্যবহার করে।
২০২১ সালের ১৫ অক্টোবর মসজিদ কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মার্কেটের
সকল দোকান ঘরের ভাড়াটিয়ার চুক্তির মেয়াদ পাঁচ বছর বৃদ্ধি করা হয়। কিছু দিন
আগে নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ ইসমাঈল
স্বপ্রণোদিত হয়ে মসজিদের আগের কমিটি বাতিল করেন। পরে নিজে মসজিদ কমিটির
সভাপতি ও মামলার ২নং বিবাদী সদর উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার রাজিবুল হাসান
রাজিব সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
মামলার বিবরণে আরো
বলা হয়েছে, তারা দায়িত্ব গ্রহণ করার পর কিছু ভূমিগ্রাসী দালাল শ্রেণির
লোকজন থেকে অন্যায় ও অবৈধ ভাবে লাভবান হয়ে বাদীসহ সকল ভাড়াটিয়াকে কোন
প্রকার নোটিশ ও পূর্ব সতর্কতা ব্যতীত উচ্ছেদ করার পাঁয়তারায় লিপ্ত হয়।
মামলার বিবাদীরা ২০২৫ সালের ১৫ মার্চ বাদীকে কোন নোটিশ না দিয়ে তাদের লোকজন
নিয়ে মসজিদের দোকানঘরে অন্যায় ও অবৈধ ভাবে প্রবেশ করে। একপর্যায়ে দোকানের
সামনে থাকা সিসি ক্যামেরা গুলো ভেঙ্গে বাদীর দোকানসহ সকল দোকানের তালা
ভেঙ্গে নিজেরা তালা মেরে চলে যায়। যোগাযোগ করলে মামলার বিবাদীরা জানায়,
পূর্বের সকল ভাড়া চুক্তি বাতিল ও জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে গিয়েছে। কোন
ভাড়াটিয়া থাকতে চাইলে তাহাদেরকে ব্যক্তিগত ভাবে আর্থিক সুবিধা দিয়ে তাদের
সাথে পুনরায় চুক্তিবদ্ধ হতে হবে।
মামলার আইনজীবী অভিজিৎ শীল জানান, মামলা দায়েরের পর আদালত বিবাদীদের সাত কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দিতে আদেশ দিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে একাধিকবার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ ইসমাঈলের মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
তবে
মামলার আরেক বিবাদী সদর উপজেলা সহকারী প্রথমিক শিক্ষা অফিসার ও মসজিদ
কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাজিবুল হাসান রাজিব বলেন,আদালতে মামলার প্রেক্ষিতে
আমি একটি নোটিশ আমি পেয়েছি। তবে ভাড়াটিয়ারা যেসব অভিযোগ করেছে তাহা সত্য
নই। আমরা ভাড়াটিয়াদের নিয়ে ৫বার বৈঠকে বসেছি। তখন ভাড়াটিয়ারা কোন বৈধ কাগজ
পত্র দেখাতে পারেনি। মসজিদ কমিটি তাদের ইচ্ছামত টাকা পয়সা খরচ করেছে। বিগত
দিনের তাদের কোন হিসাব-নিকাশের কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। মসজিদের নামে কোন
ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই। মসজিদ দোকানদারদের কাছে ১৭ লক্ষ টাকার ওপরে পাওনা
রয়েছে। দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় আগের কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি করা হয়েছে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, অনেক
ভাড়াটিয়ার কাছে অনেক টাকা পায়, তারা এতোদিন ফ্রি থাকছিলো। এর বেশি কিছু
আমার জানা নেই।