মো. আনোয়ার হোসাইন জুয়েল, কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:
ডাক্তার ও ওষুধ সংকট নিরসনের দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে ' মানবতায় আমরা অনলাইন গ্রুপ তাড়াইল ' নামক সংগঠন।
০৯ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) বেলা ১১টার সময় তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর সামনে মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে অংশ গ্রহণ করে তাড়াইল সাংবাদিক কল্যাণ সমিতি ও বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ইউনিয়ন তাড়াইল শাখার সাংবাদিকবৃন্দ ও বিভিন্ন পেশার নারী, পুরুষ।
সাংবাদিক ও সমাজকর্মী ছাদেকুর রহমান রতন এর সঞ্চালনায় উপস্থিত বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সাংবাদিক দেলোয়ার হোসেন খান, সাংবাদিক ও শিক্ষক মাও. এমদাদ উল্লাহ, সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম রিপন, লেখক আল মুরাদ, সমাজকর্মী শহিদুল ইসলাম ও অংশগ্রহণ করা বিভিন্ন পেশার লোকজন।
বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তাড়াইল উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ডাক্তার, কর্মচারী, ওষুধ ও চিকিৎসা উপকরণ সহ নানাবিদ সংকট চলে আসছে। এই সংকট কোনো ভাবেই সমাধান হচ্ছে না। যার ফলে তাড়াইলের পার্শ্ববর্তী এলাকা সমূহ সহ দরিদ্র, হতদরিদ্র ও মধ্যবিত্ত অসুস্থ নাগরিকরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যা চলতে চলতে বর্তমানে কর্তব্যরত চিকিৎসক আছেন মাত্র ২জন।
তাহারা প্রশ্ন করে আরো বলেন, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট একটি হাসপাতাল কি করে ২ জন ডাক্তার দিয়ে চলে? বর্তমানে বেশিরভাগ চিকিৎসা দিচ্ছেন এসিস্ট্যান্ট স্টাপ, নার্চ, নাইটগার্ড, পিয়ন, ঝাড়ুদারের মতো চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীরা। তৃতীয়, ৪র্থ শ্রেনীর কর্মচারীরাই যেন এখন তাড়াইল হাসপাতালের বড় ডাক্তার। হাসপাতালের ইনডোরে নিয়মিত হয় না রুগী দেখা, নিয়মিত ডাক্তারের জায়গায় বসছে এসিস্ট্যান্ট স্টাপ। ইমারজেন্সিতে রুগী সামলাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে সকলের। এমন অবস্থা চলতে দেয়া যায় না।
সিনিয়র সাংবাদিক ও তাড়াইল সাংবাদিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বলে, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ডাক্তার, ওষুধ সহ সংকট সমস্যা সমাধান না হলে আমরা আরও বড় পরিশরে আন্দোলনের ডাক দিব এমনকি প্রয়োজনে হাসপাতাল ঘেরাও করবো। আমাদের জীবন না বাঁচলে হাসপাতাল দিয়ে কি হবে? দরকার হলে বন্ধ করে দেয়া হবে।
রুগীরা অভিযোগ করে বলেন, রুগীদের খাবার দেয়া হচ্ছে নিম্নমানের এবং জরুরি চিকিৎসা উপকরণ বেশিরভাগ সময় বাহিরের দোকান থেকে কিনে আনতে হয়। ওষুধ ডিসপেনসারিতে (কাউন্টারে) দুইজন থাকার কথা থাকলেও বেশিভাগ একজনকেই দেখা যায়। উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা সপ্তাহে ২/৩ দিন অফিস করেন আর আরএমও স্যার বিভিন্ন মিটিং ও অফিসিয়াল কাজে ব্যস্ত থাকেন। নতুন বড় স্যার বেশিরভাগ ছুটিতেই থাকেন। আমাদের হাসপাতালের অবস্থা খুব খারাপ।
এ বিষয়ে তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা ডা: আতিশ দাস রাজীব বলেন, তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট। তাড়াইল উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী আরো ৪টি উপজেলার অনেক লোক এখানে চিকিৎসা নিতে আসে। ফলে চাহিদার থেকেও বেশি সেবা দিতে হয়। বর্তমানে দুইজন চিকিৎসক সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাছাড়া এই উপজেলার জন্য বরাদ্দকৃত ঔষধ তাদেরকেও দিতে হয়। তার জন্য দেখা যায়, ঔষধেরও সংকট হয়ে যায়। আমি চিকিৎসক সংকটের বিষয়ে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেছি। আশাকরি জানুয়ারির দিকে আমরা নতুন চিকিৎসক পাবো।