বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ
বাগেরহাটের
ফকিরহাট উপজেলার বাসিন্দা মার্কেন্টাইল ২১ নামের (অয়েল ট্যাংকার) জাহাজের
চিফ মাস্টার মোস্তফা কামালকে জাহাজ থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা ও অপরাধীর
বিচারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিকাল ৫টায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের টাউন নওয়াপাড়া গোলচত্বর মোড়ে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
নিহত
মোস্তফা কামালের মরদেহ (রোববার) বেলা ১১টার সময় হাতিয়া নৌ-পুলিশ সাগরে
ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করেন। তার তিনটি শিশু সন্তান রয়েছে। তিনি উপজেলার
টাউন নওয়াপাড়া গ্রামের মৃত জহুরুল ইসলামের ছেলে।
নিহত
মোস্তফা কামালের পরিবারের অভিযোগ, জাহাজের চিফ মাস্টার রমজান মাহমুদ
(খোকন) ও তার অনুগত সহকর্মীরা মিলে এ হত্যা কাণ্ড ঘটিয়েছে। মানববন্ধন থেকে এ
ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে গ্রেফতারের দাবি
জানানো হয়।
মোঃ জয়নাল শেখ
বলেন, মোস্তফা কামালের সাথে মাস্টার রমজান মাহমুদ (খোকন) এর পূর্ব শত্রুতা
আছে সেই জের ধরে দীর্ঘ দিন তার সাথে ঝামেলা করে আসছে আজকে তাকে জাহাজ
থেকে পানিতে ফেলে মেরে ফেলেছে আমরা এর বিচার চাই।
মোঃ
নূর ছাফা বলেন, মোস্তফা কামালের নতুন এত ভালো ছেলে আমাদের এলাকায় নাই
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন। সব সময় সত্য পথে চলতেন ।তাকে পরিকল্পিতভাবে
এইভাবে যে মেরে ফেলবে আমরা মানতে পারছি না আমরা এর সঠিক বিচার দাবি করি
আইনের কাছে।
নিহতের স্ত্রী
ফারহানা আক্তার বলেন ,তার স্বামী যে জাহাজে চাকরি করেন সেখানে কর্মরত
বেশিরভাগ সদস্য চিফ মাস্টার রমজান মাহমুদ খোকনের নিকট আত্মীয়। ড্রাইভার
মোস্তফা কামাল যে পদে চাকরি করতেন সেই পদে চিফ মাস্টার রমজান মাহমুদ খোকনের
আরেকজন আত্মীয়কে নিয়োগ দেয়ার জন্য ষড়যন্ত্র চলছিল। এ নিয়ে তাদের মধ্যে
সম্পর্কের অবনতি হয়। জাহাজের চিফ মাস্টার সব সময় নিহত মোস্তফা কামালের সাথে
দুর্ব্যবহার করতো বলে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়।
জানা
গেছে, শুক্রবার চট্টগ্রাম থেকে মার্কেন্টাইল ২১ নামের (অয়েল ট্যাংকার)
জাহাজটি ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করে। রাতে হাতিয়া পৌঁছানোর পর পরিবারের সঙ্গে
শেষবারের মতো কথা হয়। এরপর থেকে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। পরিবারের পক্ষ
থেকে বিষয়টি উক্ত জাহাজের কর্তৃপক্ষ ও লাইটারেজ শ্রমিক সংগঠনকে জানানো হয়।
কিন্তু তার খোঁজ মেলেনি। রোববার বেলা ১১টায় তার মরদেহ সাগরে ভাসমান
অবস্থায় হাতিয়া নৌ পুলিশ উদ্ধার করে।এ ঘটনায় নিহতের পরিবার, আত্মীয় স্বজন ও
এলাকাবাসী মানববন্ধন করে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি দাবি
করেন। একই সাথে নিহত মোস্তফা কামালের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি
জানান।
হাতিয়া নৌ-পুলিশের
বরাত দিয়ে ফারহানা আক্তার বলেন, মার্কেন্টাইল-২১ জাহাজের অন্যান্য
স্টাফদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নিয়েছেন। মোস্তফা কামালের
মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম পাঠানো হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ
পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।