মোঃ মিজানুর রহমান পাহাড়, শরীয়তপুর জেলা প্রতিনিধি:
শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলায় মেয়ের শ্বশুর বাড়ি নবজাতক নাতিকে দেখতে গিয়ে মেয়ে জামাই পারভেজ খালাসীর হাতে যৌতুকের জন্য শ্বাশুড়ী জবেদা বেগম (৪৩) খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
১০ মে মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে জাজিরা উপজেলার বড়কান্দি ইউনিয়নের শুকুর চৌকিদার কান্দী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
শাশুরী জবেদা বেগম একই উপজেলার সেনেরচর বয়াতি কান্দি গ্রামের বাচ্চু দেওয়ানের স্ত্রী।
ঘটনার পর মেয়ে জামাই পারভেজ খালাসি সহ বাড়ির লোকজন পালিয়ে গেছে। পারভেজের মা মঞ্জিলা বেগমকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে জবেদা বেগম তার জা হাসিয়া বেগমকে সাথে নিয়ে নবজাতক নাতিকে দেখতে মেয়ের শ্বশুর বাড়ি যান। শ্বাশুড়িকে দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে মেয়ে জামাই পারভেজ। গালাগাল করতে নিষেধ করায় পারভেজ তার শ্বাশুড়ির মাথায় কাঠ দিয়ে আঘাত করে। এসময় পারভেজের বাবা সালাম খালাসি, মা মঞ্জিলা বেগম এবং ভাগনী তাহমিনা আক্তার মিলে জবেদা বেগম ও হাসিয়া বেগমকে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে গুরুতর জখম করে।
স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করলে চিকিৎসক জবেদা বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার পর পারভেজ ও তার বাবা পালিয়ে গেলেও মা মঞ্জিলা বেগমকে আটক করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় জবেদা বেগমের ভাই আব্দুল হালিম মাদবর বাদী হয়ে পারভেজ ও তার বাবা-মা সহ ৪ জনকে আসামী করে জাজিরা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
নিহতের মেয়ে লিমা আক্তার বলেন, গত একমাস হয় সিজারে আমার একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। সকালে আমার মা ও কাকি আমার সন্তানকে দেখতে আমার শ্বশুর বাড়ি আসেন। আমার মাকে দেখে আমার স্বামী পারভেজ উত্তেজিত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করে। মা গালাগাল দিতে নিষেধ করায় আমার স্বামী ও শ্বশুর শ্বাশুড়ি মিলে পিটিয়ে হত্যা করে। আমি আমার মায়ের হত্যাকারীদের বিচার চাই।
তিনি আরও বলেন, বিয়ের পর থেকেই পারভেজ আমার পরিবারের কাছে যৌতুক দাবি করে আসছিলো। এ পর্যন্ত তাকে চার লাখ টাকা যৌতুক দেয়া হয়েছে। আমার সন্তান প্রসবের সময় সিজার করতে নাকি তার দুই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। পারভেজ ওই দুই লাখ টাকা আমার পরিবারের কাছে দাবি করে আসছে। দুই লাখ টাকা নিয়ে যেতে পারেনি বলে পারভেজ ও তার বাবা-মা আমার মাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।
জাজিরা থানার অফিসার ইনচার্জ মিন্টু মন্ডল বলেন, এ ঘটনায় আমরা একজনকে আটক করেছি। মামলা হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।