কাজী তানভীর মাহমুদ, স্টাফ রিপোর্টার:
রাজবাড়ী জেলার পৃথক দুইস্থানে অজ্ঞাত দুই যুবকের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন,পরিচয় সনাক্ত ও ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে লুটকৃত ২টি ইজি বাইক উদ্ধার করেছে রাজবাড়ী জেলা পুলিশ।
এ বিষয়ে বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারী) বেলা ১১ টায় পুলিশ সুপার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং করেছেন পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামান। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো,মোঃ আশিক ওরফে আকাশ মাদবর (১৯), মোঃ রবিন হোসেন (২২), মোঃ নিজাম উদ্দিন ওরফে সালমান (৩০), মোঃ আকরাম হোসেন (২৬), মোঃ সাদ্দাম হোসেন (২৬)।
পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, গত ২৬ জানুয়ারী রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ ঘাট থানা ও কালুখালী থানা এলাকায় অজ্ঞান অবস্থায় পৃথকভাবে ২ জন ব্যক্তিকে পাওয়া যায়। চিকিৎসার জন্য নিকটস্থ হাসপাতালে প্রেরণ করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মৃত্যুবরণ করেন। পরবর্তীতে নিহত ব্যক্তিদের পরিচয় জানা যায়।
নিহতরা হলেন, গোয়ালন্দ উপজেলার মোঃ ইসমাইল শেখ (৪৫) ও সুজন পাঠান(২৪)। নিহত ২ জনই পেশায় ইজিবাইক চালক ছিলেন।
নিহতদের পরিবারের সদস্যরা পৃথকভাবে রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ ঘাট ও কালুখালী থানায় এজাহার দায়ের করলে ২টি হত্যা মামলা রুজু হয়।
রাজবাড়ী জেলার পাংশা সার্কেল এএসপি সুমন কুমার সাহা, কালুখালী থানার ওসি মোঃ নাজমুল হাসান এর নেতৃত্বে এসআই মোঃ হাসানুর রহমান সহ সঙ্গীয় অন্যান্য অফিসার ও ফোর্সের সমন্বয়ে রাজবাড়ী জেলা পুলিশের চৌকস আভিযানিক দল তদন্ত শুরু করে।
তদন্ত টিম বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা লাভ করে। পরবর্তীতে আসামীদের গ্রেফতারের জন্য ঢাকা জেলা ও ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এবং পাবনা জেলার বিভিন্ন স্থানে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সংঘবদ্ধ খুনি চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা জানায়, তারা দীর্ঘদিন যাবত চেতনানাশক দ্রব্য কৌশলে চায়ের সাথে সেবন করিয়ে নিরীহ ইজিবাইক চালকদের অজ্ঞান করে ইজিবাইক চুরি করে নিয়ে চলে যায়। খুনি চক্রের একজন ভ্রাম্যমাণ চা বিক্রেতা সেজে চায়ের সাথে মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ঔষুধ মিশিয়ে ইজিবাইক চালকদের চা পান করায়। এতে ইজিবাইক চালকরা অজ্ঞান হয়ে গেলে এই চক্রের অন্য সদস্যরা কৌশলে ইজিবাইকটি নিয়ে সরে পড়ে এবং পরবর্তীতে ইজিবাইকগুলো অন্যত্র বিক্রি করে। মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ঔষুধ সেবনের ফলে কেউ কেউ মারা যায়।এই সংঘবদ্ধ চক্রটি একই কৌশলে দেশের বিভিন্ন স্থানে এই ধরণের আরো বহু অপরাধ কর্ম সংঘটন করেছে বলে স্বীকার করে।
মামলা দুটির তদন্ত অব্যাহত আছে। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।